1
সকাল
সন্ধ্যা
অনান্য

সকাল-সন্ধ্যার জিকির

১. سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ

উচ্চারণ : ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ ১০০বার।

অর্থ : ‘আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করি তাঁর প্রশংসার সাথে।’ (বুখারি ৬৪০৫, মুসলিম ২৬৯২, মিশকাত ২২৯৬-২২৯৭)

২. أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، رَبِّ أَسْأَلُكَ خَيْرَ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرَ مَا بَعْدَهَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَشَرِّ مَا بَعْدَهَا، رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَسُوءِ الْكِبَرِ، رَبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّارِ وَعَذَابٍ فِي الْقَبْرِ

উচ্চারণ : আমসাইনা ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লাহ, ওয়ালহামদু লিল্লাহি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহলাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির। রাব্বি আসআলুকা খাইরা মা ফি হাজিহিল লাইলাতি ওয়া খাইরা মা বাদাহাওয়া আউজুবিকা মিন শারি মা ফি হাজিহিল লাইলাতি ওয়া শারি মা বাদাহারাব্বি আউজুবিকা মিনাল কাসালি ওয়া সুয়িল কিবারিরাব্বি আউযু বিকা মিন আজাবিন ফিন্নারি ওয়া আজাবিন ফিল ক্বাবরি।’

অর্থ : ‘আমরা এবং সারা রাজ্য আল্লাহর জন্য সন্ধ্যায় উপনীত হলাম। আল্লাহর সমস্ত প্রশংসা, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই, তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব, তারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা, এবং তিনি সকল বস্তুর উপর সর্বশক্তিমান। হে আমার প্রভু! আমি তোমার কাছে এই রাতে যে কল্যাণ নিহিত আছে তা এবং তার পরেও যে কল্যাণ আছে তাও প্রার্থনা করছি। আর আমি তোমার কাছে এই রাতে যে অকল্যাণ আছে তা এবং তারপরেও যে অকল্যাণ আছে তা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। হে আমার প্রতিপালক! আমি তোমার কাছে অলসতা এবং বার্ধক্যের মন্দ হতে পানাহ চাচ্ছি। হে আমার প্রভু! আমি তোমার কাছে জাহান্নামের এবং কবরের সকল প্রকার আজাব থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’

এই দোয়াটি সন্ধ্যার সময় পাঠ করতে হয়। সকাল বেলায়ও এই দোয়াটি পাঠ করতে হয়। তবে সকাল বেলা পড়ার সময় শুরুতে ‘আমসাইনা ওয়া আমসাল’ এর পরিবর্তে ‘আসবাহনা ওয়া আসবাহাল’ বলতে হবে। এটি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও পাঠ করতেন। (মুসলিম ২৭২৩)

৩. সুরা ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদকুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক ‘ এবং ‘কুল আউজু বিরাব্বিন্নাস’ সকাল সন্ধ্যায় তিনবার করে তেলাওয়াত করা। যা প্রত্যেক জিনিসের মন্দ/অনিষ্ট থেকে যথেষ্ট হবে।’ (আবু দাউদতিরমিজি)

৪. সকাল হলে পড়তে হয়,

اللَّهُمَّ بِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُوْرُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা নাহয়্যা ওয়া বিকা নামুতু ওয়া ইলাইকান নুশুর।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমারই হুকুমে আমাদের সকাল হল এবং তোমারই হুকুমে আমাদের সন্ধ্যা হয়, তোমারই হুকুমে আমরা জীবিত থাকি, তোমারই হুকুমে আমরা মৃত্যু বরণ করব এবং তোমারই দিকে আমাদের পুনর্জীবন।

সন্ধ্যা হলে পড়তে হয়,

اللَّهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا وَبِكَ أَصْبَحْنَا وَبِكَ نَحْيَا وَبِكَ نَمُوتُ وَإِلَيْكَ النُّشُورُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বিকা আমসাইনা ওয়া বিকা আসবাহনা ওয়া বিকা নাহয়্যা ওয়া বিকা নামুতু ওয়া ইলাইকাল মাসির।

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমারই হুকুমে আমাদের সন্ধ্যা হল এবং তোমারই হুকুমে আমাদের সকাল। তোমারই হুকুমে আমরা জীবিত থাকি, তোমারই হুকুমে আমরা মৃত্যুবরণ করব এবং তোমারই দিকে আমাদের প্রত্যাবর্তনস্থল।

এই দোয়াটি আল্লাহর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সাহাবাদের শিক্ষা দিতেন।’ (আবু দাউদ ৫০৬৮, তিরমিজি ৩৩৯১)

৫. সাইয়্যেদুল ইসতেগফার

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আন্তা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আন্তা খালাকতানিওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাত্বাতুআউজুবিকা মিন শারি মা সানাতুআবুউ লাকা বি-নিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউ বিজামবী ফাগফিরলি ফাইন্নাহু লা ইয়্যাগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আন্তা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ, আমি তোমার দাস। আমি তোমার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত আছি। আমি যা করেছি, তার মন্দ থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। আমার উপর তোমার যে সম্পদ রয়েছে, তা আমি স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও আমি স্বীকার করছি। সুতরাং তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও, যেহেতু তুমি ছাড়া আর কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারে না।’

ক্ষমা প্রার্থনার এই দোয়াটি যদি কেউ সন্ধ্যা বেলায় পড়ে ঐ রাতে মারা যায় অথবা সকাল বেলায় পড়ে ঐ দিনে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি ৬৩২৩)

৬. اللَّهُمَّ عَالِمَ الغَيْبِ والشَّهَادَةِ، فَاطِرَ السَّموَاتِ والأرْضِ، رَبَّ كُلِّ شَيءٍ ومَلِيْكَهُ، أشْهَدُ أنْ لا إلَهَ إلاَّ أنْتَ، أعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي، وَمِنْ شَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আলিমাল গায়বি ওয়াশশাহাদাতিফা-ত্বিরাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি রাব্বা কুল্লি শাইয়িন ওয়া মালিকাহুআশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লা আন্তা আউজুবিকা মিন শারি নাফসি ওয়া মিন শাররিশ শায়ত্বনি ওয়া শিরকিহি।’

অর্থ : ‘হে উপস্থিত ও অনুপস্থিত পরিজ্ঞাতা! আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃজনকর্তা! প্রত্যেক বস্তুর প্রতিপালক! ও অধিপতি আল্লাহ! আমি সাক্ষি দিচ্ছি যে তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই। আমি আমার আত্মার মন্দ থেকে এবং শয়তানের মন্দ ও শিরক থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

এই দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় ও শয়নকালে পঠনীয়। (রিয়াদুস সালেহিন ১৪৫৪, তিরমিজ ৩৩৯২)

৭. بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা য়্যাদুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিসসামায়ি ওয়াহুওয়াস সামিউল আলিম।’

অর্থ : ‘আমি শুরু করছি সেই আল্লাহর নামে, যার নামের সাথে পৃথিবী ও আকাশের কোন জিনিস ক্ষতি সাধন করতে পারে না এবং তিনিই সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞাতা।

এই দোয়াটি সন্ধ্যাকালে ৩ বার করে পাঠ করলে কোন জিনিস ক্ষতি সাধন করতে পারে না। (তিরমিজি ৩৩৮৮)

৮. أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ

উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিনশারি মা খালাকা।

অর্থ : ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর অসিলায় তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার মন্দ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’

এই দোয়াটি সন্ধ্যার সময় পড়লে ঐ রাতে কোনো সাপ-বিচ্ছু ইত্যাদি কষ্ট দিতে পারে না। (মেশকাত ২৪২২, তিরমিজি ৩৪৩৭)

৯. اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْعَفْوَ وَالْعَافِيَةَ فِي دِينِي وَدُنْيَايَ وَأَهْلِي وَمَالِي، اللَّهُمَّ استُرْ عَوْرَاتي، وآمِنْ رَوْعَاتي، اللَّهمَّ احْفَظْنِي مِنْ بَينِ يَدَيَّ، ومِنْ خَلْفي، وَعن يَميني، وعن شِمالي، ومِن فَوْقِي، وأعُوذُ بِعَظَمَتِكَ أنْ أُغْتَالَ مِنْ تَحتي

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আ-ফিয়াতা ফিদদুনয়্যা ওয়াল আ-খিরাহআল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আ-ফিয়াতা ফি দ্বীনী ওয়া দুনয়্যা-য়্যা ওয়া আহলি ওয়া মা-লীআল্লাহুম্মাসতুর আওরা-তী ওয়া আমিন রাওআ-তীআল্লাহুম্মাহফাজনী মিম বাইনি ইয়্যাদাইয়্যা অমিন খালফী ওয়া আঁই ইয়্যামীনী ওয়া আন শিমালী ওয়া মিন ফাউক্বীওয়া আউজু বিআজমাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহতী।

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ইহকালে ও পরকালে নিরাপত্তা চাচ্ছি। হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার নিকট আমার ধর্ম ও পার্থিব জীবনে এবং পরিবার ও সম্পদে ক্ষমা ও নিরাপত্তা ভিক্ষা করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমার লজ্জাকর বিষয়সমূহ গোপন করে নাও এবং আমার ভীতিতে নিরাপত্তা দাও। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে আমার সম্মুখ ও পশ্চাৎ, ডান ও বাম এবং উপর থেকে রক্ষণাবেক্ষণ কর। আর আমি তোমার মাহাত্মের অসিলায় আমার নিচে ভূমিধ্বস থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যেক সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দোয়াটি পড়তেন।’ (মেশকাত ২৩৯৭, আবু দাউদ ৫০৭৪)

১০. اصْبَحْنا عَلَى فِطْرَةِ الإسْلاَمِ، وَعَلَى كَلِمَةِ الإِخْلاَصِ، وَعَلَى دِينِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعَلَى مِلَّةِ أَبِينَا إبْرَاهِيمَ حَنِيفاً مُسْلِماً وَمَا كَانَ مِنَ المُشْرِكِينَ

উচ্চারণ : আসবাহনা আলা ফিত্বরাতিল ইসলামি ওয়া আলা কালিমাতিল ইখলাসওয়া আলা দ্বীনি নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামওয়া আলা মিল্লাতি আবীনা ইবরাহীমা হানীফাম মুসলিমউ ওয়া মা কা-না মিনাল মুশরিকীন।

অর্থ : আমরা সকালে উপনীত হলাম ইসলামের প্রকৃতির উপর, ইখলাসের বাণীর উপর, আমাদের নবি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দ্বীনের উপর এবং আমাদের পিতা ইবরাহিম আলাইহিস সালামের ধর্মাদর্শের উপর, যিনি একনিষ্ঠ মুসলিম ছিলেন এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।

এটিও তিনি সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করতেন। ( মিশকাত ২৪১৫, সহীহুল জামে ৪/২০৯)

১১. يا حي يا قيوم برحمتك أستغيث أصلح لي شأني كله ولا تكلني إلى نفسي طرفة عين

উচ্চারণ : ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিসআসলিহ লী শানী কুল্লাহওয়া লা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা আইন।

অর্থ : হে চিরঞ্জীব! হে অবিনশ্বর। আমি তোমার করুণার অসিলায় ফরিয়াদ করছি। তুমি আমার সকল বিষয়কে সংশোধন করে দাও। আর চোখের এক পলক বরাবরও আমাকে আমার নিজের ওপর সোপর্দ করে দিও না।’ (নাসাঈ, বাযযার সহীহ তারগীব ১/২৭৩, ৬৫৪)

১২.  আয়াতুল কুরসি

اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلۡحَیُّ الۡقَیُّوۡمُ ۬لَا تَاۡخُذُهٗ سِنَۃٌ وَّ لَا نَوۡمٌ ؕ لَهٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ مَنۡ ذَا الَّذِیۡ یَشۡفَعُ عِنۡدَهٗۤ اِلَّا بِاِذۡنِهٖ ؕ یَعۡلَمُ مَا بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ مَا خَلۡفَهُمۡ ۚ وَ لَا یُحِیۡطُوۡنَ بِشَیۡءٍ مِّنۡ عِلۡمِهٖۤ اِلَّا بِمَا شَآءَ ۚ وَسِعَ کُرۡسِیُّهُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ ۚ وَ لَا یَـُٔوۡدُهٗ حِفۡظُهُمَا ۚ وَ هُوَ الۡعَلِیُّ الۡعَظِیۡمُ

উচ্চারণ- আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তাঅ খুযুহু সিনাতুঁও ওয়া লা নাওম। লাহু মা ফিস্ সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি। মাং জাল্লাজি ইয়াশফাউ ইংদাহু ইল্লা বি-ইজনিহি। ইয়ালামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়া মা খালফাহুমওয়া লা ইউহিতুনা বিশাইয়্যিম্ মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শাআ ওয়াসিআ কুরসিইয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বিওয়া লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিয়্যুল আজিম।’

অর্থ : (তিনিই) আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং ঘুমও নয়। সবই তাঁর, আসমান ও জমিনের মধ্যে যা কিছু রয়েছে। কে আছ এমন- যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? (চোখের সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানের সীমা থেকে কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টিত করতে পারবে না, কিন্তু ‘হ্যাঁ’, তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। সমগ্র আসমান এবং জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে তাঁর সিংহাসন। আর সেগুলোকে ধারণ (নিয়ন্ত্রণ) করা তাঁর জন্য কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।’ (তারগীব ৬৫৫)

১ নং যিক্র: আয়াতুল কুরসী (সন্ধ্যায় ১ বার

اللهُ لا إلهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَةَ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۚ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِةٍ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَوتِ وَ 

الْأَرْضَ وَلَا يَكُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

অর্থ: আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো হক ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পেছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর ‘কুরসী আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান । 

 সুরা বাক্কারা: ২৫৫। 

 

ফযীলত: কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে সারাদিন সারারাত জিনের আক্রমণ থেকে নিরাপত্তায় থাকবে। রাতে শোয়ার সময় পড়লে শয়তান নিকটবর্তী হবে নাপাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের পর পড়লে জান্নাত লাভে মৃত্যু ব্যতীত কোনো বাধা থাকবে না ।

২ নং যিক্র:(সন্ধ্যায় ৩ বার)

সূরা ইখলাস (কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ), সূরা ফালাক্ব, সূরা নাস প্রত্যেকটি ৩ বার করে সকালে এবং ৩ বার করে সন্ধ্যায় । 

ফযীলত: পাঠকারীর জন্য সব কিছুর ক্ষতি থেকে নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে । 

নং যিক্র (সন্ধ্যায় ৭ বার )

حَسْبِيَ اللهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ. 

উচ্চারণ: ‘হাসবিয়াল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুওয়া রাব্বুল ‘আরশিল আযীম

হাকিম, অধ্যায়: ফাযায়েলুল কুরআন, হাদীস নং ২০৬৪ ৷ 

বুখারী, ২৩১১ (মাকতাবায়ে শামেলা), ২১৬২ (ই.ফা.)। 

নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা; হাইসামী রহ., মাজমাউয যাওয়ায়েদ (১০/১০২-এ বলেছেন 

তাবারানী একটি ভালো সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)। 

আবু দাউদ, ৪৯৯৬ (ই.ফা.); তিরমিযী, ৩৫৭৫ (ই.ফা.)সূরা তাওবা: ১২৯। 

অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো হক ইলাহ নেই। আমি তাঁর ওপরই ভরসা করেছি। আর তিনি মহান আরশের রব । 

ফযীলত: যে ব্যক্তি দু'আটি সকালে ৭ বার এবং সন্ধ্যায় বার বলবে, তার দুনিয়া ও আখিরাতের সকল দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন। 

৪ নং যিক্র: সায়্যিদুল ইস্তিগফার (সন্ধ্যায় ১ বার)

 

اللهم أنت ربي لا إلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي، وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ اَعُوذُبِكَ مِنْ شَرِمَا صَنَعْتُ اَبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَى، وَاَبُوْءُ لَكَ بِذَنْبِئ ، فَاغْفِرْلِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا انْتَ

१ 

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বী, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা, খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া'দিকা মাস্তাত্বা'তু। আউযু বিকা মিন শাররি মা- সানা'তু, আবূউ লাকা বিনি'মাতিকা আলাইয়্যা,ওয়া আবূউ লাকা বিযাম্বী। ফাগফির লী ফাইন্নাহূ লা- য়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা- আনতা ৷ 

আবু দাউদ, ৫০৮১ আল্লামা শুআইব আল আরনাউত সহীহ বলেছেন। আল্লামা আলবানী, সিলসিলায়ে যায়ীফাহ ‘আমালুল ইয়াওমি ওয়াস্সুন্নাহ- ইবনুস সুন্নী, নাবাবী-আল আযকার 

অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমার প্রতিপালক, আপনি ছাড়া কোনো হক ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্যানুযায়ী আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির ওপর রয়েছি। আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই। আমার প্রতি আপনার প্রদত্ত নিয়ামত স্বীকার করছি। আর আপনার কাছে আমার পাপকর্মেরও স্বীকারোক্তি দিচ্ছি। অতএব আপনি আমাকে মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করতে পারেনা। 

ফযীলত: দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে সকাল এবং সন্ধ্যায় পাঠ করলে সেদিনে বা রাতে মারা গেলে নিশ্চিতভাবে জান্নাতী হবে। 

৫ নং যিক্র (সকাল-সন্ধ্যায় ৩ বার

بِسْمِ اللهِ الَّذِئ لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْيٌّ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ العَلِيمُ

উচ্চারণ: বিমিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াদুররু মা আমিহী শাইউন ফিল্ আরদ্বি ওয়ালা- ফিস্ সামা-ই ওয়া হুওয়াস্ সামীউল ‘আলীম। 

বুখারী, ৬৩০৬ (শামেলা), ৫৮৬৭ (ই.ফা.)। 

অর্থ: শুরু করছি আল্লাহর নামে; যাঁর নামের সাথে আসমান এবং যমীনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী । 

ফযীলত: যে ব্যক্তি প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় এই দু'আ ৩ বার করে বলবে, কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। 

৬ নং যিক্র (সকাল-সন্ধ্যায় ১০ বার

إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ 

وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ. 

উচ্চারণ: লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহ্ লাহুল মুল্‌কু ওয়া লাহুল ‘হামদু ওয়া হুওয়া ‘আলা- কুল্লি শাই ইন ক্বাদীর। 

অর্থ: একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁরই, আর তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। 

ফযীলত: সকাল-সন্ধ্যায় ১০ বার বললে ১০টি করে নেকী, ১০টি করে গুনাহ মাফ এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে এবং ৪ জন কৃতদাস মুক্ত করার সাওয়াব ও শয়তান থেকে মুক্তি নসীব হবে। অথবা কষ্ট হলে একবার বলতে হবে।১ এই যিক্র সকালে ১০০ বার বললে ১০ জন কৃতদাস মুক্ত করার সাওয়াব পাবে, ১০০ নেকী পাবে, ১০০ গুনাহ মাফ হবে এবং সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান থেকে নিরাপত্তা অর্জিত হবে। আর ওই দিনে কেউ আর তার চেয়ে বেশি আমলকারী বলে গণ্য হবে না। তবে যে ব্যক্তি এর চেয়েও বেশি সংখ্যকবার পড়েছেন তার কথা ভিন্ন।

তিরমিযী, ৩৩৮৮; ইবনে মাজাহ, ৩৮৬৯ (শামেলা ও তাওহীদ পাবলিকেশন্স)। 


৭ নং যিক্র (সন্ধ্যায় ১ বার)

 

اللهُمَّ بِكَ أَمْسَيْنَا، وَبِكَ أَصْبَحْنَا، وَبِكَ نَحْيَا، وَبِكَ 

نَمُوتُ وَإِلَيْكَ الْمَصِير. 

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা বিকা আমসাইনা, ওয়া বিকা আসবাহনা, ওয়াবিকা না’হয়া, ওয়াবিকা নামৃত, ওয়া ইলাইকাল মাসীর। 

অর্থ: হে আল্লাহ, আমরা আপনার অনুগ্রহে সন্ধ্যায় উপনীত হয়েছি এবং আপনারই অনুগ্রহে আমরা সকালে উপনীত হয়েছি। আর আপনার করুণায় আমরা জীবিত থাকি, আপনার ইচ্ছায়ই আমরা মৃত্যুবরণ করব; আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তিত হব । 

ফযীলত: নবী – এ দু'আ পড়ার প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন।