প্রশ্নগুলোর তথ্যসমূহ

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সমূহ

রুকইয়াহ কী?

উত্তরঃ ব্যবহারিক অর্থে রুকইয়াহ শারইয়াহ বলতে ‘ইসলামসম্মত ঝাড়ফুঁক’ বুঝায়। রুকইয়ার পারিভাষিক অর্থ হল, “কোরআনের আয়াত, আল্লাহর নামের যিকর, হাদিসে রাসূল ﷺ অথবা সালাফে সালেহীন থেকে বর্ণিত দোয়া পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কোন বিপদ থেকে মুক্তি চাওয়া কিংবা রোগ থেকে আরোগ্য কামনা করা।” একদম সহজে বললে, রুকইয়াহ হলো বদনজর, জ্বীন, যাদু ইত্যাদি প্যারানরমাল সমস্যার পাশাপাশি কিছু শারিরীক-মানসিক রোগের জন্য ইসলাম সম্মত ঝাড়ফুক। এই চিকিৎসায় সাধারণত কুরানের আয়াত ও হাদীসে বর্ণিত দুয়া পড়ে সরাসরি ঝাড়ফুঁক করা হয়, অথবা পানি, মধু, তেল ইত্যাদিতে ফুঁ দিয়ে ব্যবহার করতে বলা হয়।

সমস্যা ভাল হতে কতদিন রুকইয়াহ করা লাগবে?

উত্তরঃ প্রথমত, পৃথিবীর কোন রোগের ক্ষেত্রেই এটা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব না, এটা আল্লাহই ভাল জানেন। আল্লাহ যতদিন চাইবেন ততদিন লাগবে। তবে অভিজ্ঞতার আলোকে বললে, সমস্যার দৈর্ঘ-প্রস্থ-গভীরতা অনুযায়ী সময় কম বেশি লাগে। ভালোভাবে রুকইয়াহ করলে বদনজরের ক্ষেত্রে ১ সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। শুধু জ্বিনের আসর হলে; এক থেকে সাতদিন লাগে, সমস্যা বেশি হলে কয়েকমাস পর্যন্ত লাগতে পারে। জাদুর ক্ষেত্রে এভাবে বলা যায় না, তবে বারবার জাদু না করলে বা জাদুর সাথে জ্বিন জড়িত না থাকলে এক সপ্তাহ থেকে থেকে চার মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে যদি জাদুর কারণে জ্বিন ভর করে কিংবা বারবার জাদু করতে থাকে তাহলে বিষয়টা জটিল হয়ে যায়, তখন সময় বলা একদমই সম্ভব না। তবে কিছুদিন ভালভাবে রুকইয়াহ করার পর সমস্যা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আরেকটা বিষয় হল, আল্লাহর ইচ্ছায় কারও কারও ক্ষেত্রে আজীবন কিছু সমস্যা থেকে যায়। সম্পূর্ণ ভাল হয় না। এক্ষেত্রে রোগী এবং তার পরিবার যদি কোন নাজায়েজ বা কুফরি জাদুর সহযোগিতা না নেয়, বিপদে সবর করে, তাহলে আখিরাতে আল্লাহ এর বিনিময়ে ক্ষমা এবং জান্নাত দেবেন।

সিহরের আয়াত কোনগুলো?

উত্তর: সুরা আরাফ ১১৭-১২২, সুরা ইউনুস ৮১-৮২ এবং সুরা ত্বহা ৬৯নং আয়াত – এগুলোকে সিহরের আয়াত বলে। এর সাথে সুরা বাকারা ১০২নং আয়াতও পড়া যায়।

আয়াতুশ শিফা কোনগুলো?

উত্তর: আয়াতে শিফা মোট ৬টি। সূরা তাওবাহ ১৪, ইউনুস ৫৭, নাহল ৬৯, বনি ইসরাইল ৮২, শু’আরা ৮০, হা-মিম সাজদা ৪৪নং আয়াত।

আয়াতুশ সাকিনাহ কোনগুলো?

উত্তর: আয়াতুস সাকিনা মোট ৬টি। সূরা বাকারা ২৪৮, সূরা তাওবা ২৬ এবং ৪০, সূরা ফাতহ ৪, ১৮ এবং ২৬নং আয়াত।

পিরিয়ড অবস্থায় মাসনুন আমল করা যাবে?

উত্তরঃ প্রথমতঃ পিরিয়ডের সময় যেকোন দোয়া পড়া জায়েজ। তাই মাসনুন আমলের মাঝে যে দোয়াগুলো আছে, সেসব নিশ্চিন্তে পড়তে পারেন। দ্বিতীয়তঃ অনেক ফক্বিহদের মতে আয়াতুল কুরসি এবং তিনকুল হিফাজতের দোয়া হিসেবে পড়া বৈধ, এই মত অনুসরণ করলে এসবও পড়তে পারেন। আর সতর্কতা হিসেবে না পড়তে চাইলে ওইসব আয়াতের অডিও শুনতে পারেন ।

গর্ভাবস্থায় রুকইয়া করা যাবে?

উত্তর: এর উত্তর ব্যক্তিভেদে ভিন্ন, তবে সাধারণত এই সময়ে আমরা রুকইয়াহ করতে মানা করি, যাতে সন্তানের উপর কোন ইফেক্ট না পড়ে। তবে গর্ভের সন্তান নষ্টের যাদুর সমস্যা থাকলে তখন করা যেতে পারে।