হিজামা পরিচিতি :

  • হিজামা (حِجَامَة ) একটি নববী চিকিৎসা ব্যবস্থা। এটি আরবী শব্দ ‘আল-হাজম’ থেকে এসেছে। যার অর্থ চোষা বা টেনে নেওয়া। আধুনিক পরিভাষায় Cupping (কাপিং)। হিজামার মাধ্যমে দূষিত রক্ত (Toxin) বের করা হয়। এতে শরীরের মাংসপেশী সমূহের রক্ত প্রবাহ দ্রুততর হয়। পেশী, চামড়া, ত্বক ও শরীরের ভিতরের অরগান সমূহের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে এবং শরীর সতেজ ও শক্তিশালী হয়।
  • হিজামা বা Wet Cupping অতি প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে আরব বিশ্বে জনপ্রিয়। এ হিজামা থেরাপী ৩০০০ বৎসরেরও পুরাতন চিকিৎসা পদ্ধতি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে উৎপত্তি হ’লেও চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে চীন, ভারত ও আমেরিকায় বহু পূর্বে থেকেই এটি প্রচলিত ছিল। ১৮ শতক থেকে ইউরোপেও এর প্রচলন রয়েছে। হিজামা বা Cupping Therapy এখন বিশ্বের জনপ্রিয় চিকিতৎসা গুলোর মধ্যে একটি। এটিতে কোন ধরনের ঔষধের প্রয়োজন হয় না।
  • এ হিজামা থেরাপী ৩০০০ বৎসরেরও পুরাতন চিকিৎসা পদ্ধতি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে উৎপত্তি হ’লেও চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে চীন, ভারত ও আমেরিকায় বহু পূর্বে থেকেই এটি প্রচলিত ছিল। ১৮ শতক থেকে ইউরোপেও এর প্রচলন রয়েছে।

হিজামা তিবেব নববী :

হিজামা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হিজামার উপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করেছেন, নিজে ব্যবহার করেছেন এবং হিজামা ব্যবহারে উৎসাহিত করেছেন। হিজামার ব্যবহার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হিজামা করেছেন তাঁর মাথা ব্যথার জন্য, পায়ে, পিঠে, পিঠের ব্যথার জন্য দুই কাঁধের মধ্যে, ঘাড়ের দু’টি রগে, ও হাড় মচকে গেলে।

  • হিজামা হল এমন একটি প্রাচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতি, যাতে মানুষের সকল প্রকার শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সুস্থতা বিদ্যামান রয়েছে।
  • জিন, জাদু ও বদনজরের চিকিৎসায় হিজামা অত্যন্ত ফলপ্রসু প্রমাণিত হয়ে আসছে।

হিজামা সংক্রান্ত হাদিস :

  • হযরত আবু হুরাইরা রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “জিবরীল আমাকে জানিয়েছেন যে, মানুষ চিকিৎসার জন্য যতসব উপায় অবলম্বন করে, তম্মধ্যে হিজামাই হল সর্বোত্তম।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর : ৭৪৭০
  • হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কেউ হিজামা করতে চাইলে সে যেন আরবী মাসের ১৭, ১৯ কিংবা ২১ তম দিনকে নির্বাচিত করে। রক্তচাপের কারণে যেন তোমাদের কারো মৃত্যু না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে (হিজামা)।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর : ৩৪৮৬
  • হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আমি মেরাজের রাতে যাদের মাঝখান দিয়ে গিয়েছি, তাদের সবাই আমাকে বলেছে, হে মুহাম্মদ, আপনি আপনার উম্মতকে হিজামার আদেশ করবেন।” সুনানে তিরমিযী হাদীছ নম্বর : ২০৫৩
  • হযরত আনাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “গরম বৃদ্ধি পেলে হিজামার সাহায্য নাও। কারণ, কারো রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে তার মৃত্যু হতে পারে।” আল-হাকিম, হাদীছ নম্বর : ৭৪৮২
  • হযরত জাবির রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় হিজামায় শেফা রয়েছে।” ছহীহ মুসলিম, হাদীছ নম্বর : ২২০৫
  • হযরত আবদুল্লাহ বিন উমর রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “খালি পেটে হিজামাই সর্বোত্তম। এতে শেফা ও বরকত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে বোধ ও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।” সুনানে ইবনে মাজা, হাদীছ নম্বর : ৩৪৮৭
  • হযরত আবদুল্লাহ্ বিন আব্বাস রদিয়াল্লহু আনহু থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হিজামাকারী কতই উত্তম লোক। সে দূষিত রক্ত বের করে মেরুদন্ড শক্ত করে ও দৃষ্টিশক্তি প্রখর করে।” সুনানে তিরমিযী, হাদীছ নম্বর : ২০৫৩
  • ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) মিরাজে যাওয়ার সময় তিনি ফিরিশতাদের যে দলের নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন তারাই বলেন, ‘হে আল্লাহর মোহাম্মদ (সা:) আপনি অবশ্যই হিজামা করুনএবং আপনার উম্মাতদের হিজামার হুকুম করুন।(তিরমিযী ২০৫৩, সহীহাহ ২২৬৩, মিশকাত ৪৫৪৪)
  • ফেরেস্তাগন বলেন“আপনার উম্মাতদের হিজামা নিতে বলুন।” (সুনানে তিরমিযী-৩৪৭৯)
  • ইবনুল ক্বাইয়ুম (রহ.) বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন যাদু দ্বারা পীড়িত হন তখন তিনি মাথায় হিজামা লাগান এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম ঔষধ, যদি সঠিকভাবে করা হয়।”(যাদুল মা‘আদ ৪/১২৫-১২৬)
  • হযরতজাবির (রাযি.) হ’তে বর্ণিত যে, নবী করীম (সা.)-এর (পায়ে) যে ব্যথা ছিল, তার জন্য তিনি ইহরাম অবস্থায় হিজামা লাগিয়েছিলেন।(নাসাঈ হা/২৮৫২)

♦️ হিজামা করার ক্ষেত্রে কিছু দিক নির্দেশনাঃ

১। নিয়তকে একেবারে পরিশুদ্ধ রাখা যে শিফা/রোগ মুক্তি শুধু মাত্র আল্লাহ্‌সুবহানাহু ওয়া ওয়ালার পক্ষ থেকে আশে।
২। খালি পেটে হিজামা করা উওম ।
৩। গোসল করে হিজামা করাটা ভালো, তবে গোসলের তিন ঘণ্টা পর হিজামা করতে হবে।
৪। হিজামার আগের দিন ও পরের দিন সঙ্গম না করা ভালো।
৫। ইহরাম/সাওম অবস্থায় হিজামা করা যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে মুহরিম ও
সাওম অবস্থায়ও হিজামা করেছেন।
৬। স্বাভাবিক অবস্থায় সপ্তাহের সোম, মজ্ঞল ও বৃহস্পতি বার করা ভালো। এছাড়াও আরবি মাসের ১৭, ১৯ ও ২১ তারিখ হিজামা করানো উওম। তবে প্রয়োজনে যে কোন দিন যে কোন সময়েও হিজামা করা যায়।

♦️ হিজামায় কোন সাইড ইফেক্ট আছে?

  • হিজামা এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যাতে অন্যান্য মেডিক্যাল ড্রাগসের মত কোন সাইড ইফেক্ট নেই। কেবল নিরাময় আছে (সুবাহনাল্লাহ) । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিজের জন্য এ চিকিৎসাটি করিয়েছিলেন। ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে এবং তাঁকে বিষ দ্বারা আক্রমণ করা হলে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেছেন যে, “এক ইহুদী মহিলা রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বিষযুক্ত গোশত খেতে দিয়েছিল। তিনি তাকে সংবাদ পাঠিয়ে বললেন, কেন তুমি এ কাজ করলে? মহিলাটি উত্তরে বলল, যদি তুমি সত্যিই আল্লাহর রাসূল হও, তবে আল্লাহ তোমাকে জানিয়ে দিবেন। আর তুমি যদি তাঁর রাসূল না হও, তবে আমি মানুষকে তোমার থেকে নিরাপদ রাখব! যখন আল্লাহর রাসূল (সা.) এর যন্ত্রণা অনুভব করতে লাগলেন, তিনি হিজামা ব্যবহার করলেন।

একদা ইহরাম অবস্থায় তিনি ভ্রমণে বের হ’লেন এবং ঐ বিষের যন্ত্রণা বোধ করলেন, তখন তিনি হিজামা ব্যবহার করলেন।”(মুসনাদে আহমাদ ১/৩০৫, সনদ হাসান)

♦️ শরীরে কোন সমস্যা না থাকলেও কি হিজামা করানো যাবে?

  • হ্যা, করানো যাবে। এক. এতে সুন্নাহ পালন হবে দুই. নিয়মিত সুন্নাহ হিজামা করালে চুল বৃদ্ধি পায়, চুল পড়া কমে, স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়, অলসতা, অবসাদগ্রস্ততা বিদূরিত হয়, রোগজীবাণু সহজেই আক্রান্ত করতে পারে না, রক্ত পরিশুদ্ধ হয়, শরীর রোগ প্রতিরোধক্ষম হয়ে উঠে অনেকটা disease-proof এর মত।

♦️ ল্যাব টেস্টঃ হিজামার বিজ্ঞানভিত্তিক উপকারিতা★

  • দামেস্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের (Damascus University) সাবেক ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাবীল আল শরীফ এর অধীনে ২০০১ সালে হিজামার উপকারিতা যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষাগারে বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরীক্ষাটি ৩০০ জন ব্যক্তির উপর পরিচালিত হয়। পরিচালিত পরীক্ষায় নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ বেরিয়ে আসে; যা হিজামার উপকারিতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বহন করে-

১. উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।

২. নিম্ম রক্তচাপের ক্ষেত্রে রক্তচাপ বেড়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।

৩. ECG এর পূর্বের গ্রাফের তূলনায় পরের গ্রাফে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে।

৪. ESR কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।

৫. RBC এর সংখ্যা স্বাভাবিক হয়েছে।

৬. Polycythemia এর ক্ষেত্রে Hemoglobin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।

৭. Hemoglobin স্বল্পতার ক্ষত্রে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। এটি নতুন নতুন স্বাভাবিক RBC উৎপন্ন হওয়ায় ইংগিত প্রদান করে; যা শরীরের কোষ সমূহে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি করে থাকে।

৮. হিজামা গ্রহনকারীদের ৬০% ক্ষেত্রে রক্তে Leukocyte বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।

৯. সকল Rheumatic রোগাক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে Neutrophil বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।

১০. রক্তের শ্বেতকণিকা (WBC) ৭১.৪% ক্ষেত্রে বেড়েছে। এটি প্রমান করে যে Rheumatic ও অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগ হিজামা করার পর সেড়ে গেছে।

১১. হাঁপানি রোগীদের ৮৩.৩% ক্ষেত্রে Neutrophil এর সংখ্যা বেড়েছে।

১২. হিজামা করানোর কারনে Neutrophil এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে।

১৩. হৃদরোগীদের ৭৬.৯% ক্ষেত্রে Neutrophil সংখ্যা কমে স্বাভাবিক হয়েছে।

১৪. রক্তের Thrombocyte ৫০.৬% ক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে।

১৫. অনুচক্রিকার স্বল্পতার সকল ক্ষেত্রে তা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় পৌঁছেছে।

১৬. Essential Thrombocythemia এর ৫০% ক্ষেত্রে Thrombocytes কমে গিয়ে স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

১৭. ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের রক্তে চিনির পরিমাণ ৯২.৫% ক্ষেত্রে কমেছে।

১৮. রক্তের বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Creatinine ৬৬.৬৬ ক্ষেত্রে কমেছে।

১৯. সকল ক্ষেত্রে হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে Creatinine এর পরিমান খুবই বেশী ছিল।

২০. যেসকল রোগীদের রক্তে Creatinine বেশী ছিল, হিজামার পর তাদের ৫৭% ক্ষেত্রে রক্তে এর মাত্রা কমে গিয়েছিল।

২১. ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে Uric acid এর মাত্রা কমে গিয়েছে।

২২. Uric acid বৃদ্ধির ফলে যেসকল অসুবিধা দেখা দিয়েছিল, ৭৩.৬৮% ক্ষেত্রে সেসকল অসুবিধা দূর হয়েছে।

২৩. যাদের রক্তে Urea level বেড়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ৮০% ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

২৪. যাদের রক্তে SGPT বেড়ে গিয়েছিল, ৮০% ক্ষেত্রে তাদের উক্ত মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে গিয়েছে। এটি হিজামা করানোর দ্বারা যকৃতের কার্যকারিতা বৃদ্ধির ইংগিত বহন করে।

২৫. হিজামার পর কেন ECG এর উন্নতি হয়েছিল; SGPT এর নিম্নগামীতার মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা পাওয়া গেল।

২৬. Alkaline phosphate এর বৃদ্ধিপ্রাপ্ত মাত্রা ৬২.৮২% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমেছে।

২৭. ৫৪.৯% ক্ষেত্রে Amylase এর মাত্রা কমেছে।

২৮. সকল ক্ষেত্রে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত Albumin কমে স্বাভাবিক হয়েছে।

২৯. রক্তের বর্ধিত Cholesterol এর মাত্রা ৮৩.৬% ক্ষেত্রে কমেছে।

৩০. যাদের রক্তে Triglyceride অধিক ছিল, হিজামা করানোর পর তাদের ৭৫% ক্ষেত্রে তা কমেছে।

৩১. Ca, Na, K আয়নের মাত্রা ৯০% ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে।

৩২. বর্ধিত CPK ৬৬.৬৬% ক্ষেত্রে কমে স্বাভাবিক হয়েছে।

৩৩. হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে সকল RBC-ই ছিল অস্বাভাবিক আকৃতির। যেমনঃ Hypochromic, Burr, Target, Crenated, Spherocytes, Poikilocytes, Anisocytes, Schistocytes, Acanthocytes ইত্যাদি।

৩৪. বের হওয়া রক্তে Leukocyte এর সংখ্যা শিরার রক্তের ১০% এরও কম ছিল। এটি শরীরের Immunity রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান; যা হিজামার মাধ্যমে বের না হওয়ার ইংগিত বহন করে।

৩৫. ৬৬% ক্ষেত্রে রক্তে লৌহের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।

৩৬. প্রায় ৯৩% ক্ষেত্রে CPK এবং LDH স্বাভাবিক মাত্রায় ছিল।

৩৭. শিরার রক্তে TIBC এর স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২৫০-৩৭০ মাইক্রো গ্রাম। কিন্তু হিজামার মাধ্যমে বের হওয়া রক্তে TIBC এর মাত্রা ছিল প্রতি ডেসিলিটারে ৪২২-১০৫৭ মাইক্রো গ্রাম অর্থাৎ খুবই বেশী।
পরীক্ষাটি এই ইংগিত দেয় যে হয়তো এমন বিশেষ কোন কারণ রয়েছে; যার ফলে হিজামার কর্তিত অংশের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লৌহ অণু বেরিয়ে আসতে পারেনা। বরং লৌহ অণুগুলো রক্তনালীতে রয়ে যায়; যাতে নতুন নতুন RBC উৎপাদনে ব্যবহৃত হতে পারে।

সুতরাং, উপরোক্ত Laboratory Test থেকে এটা দিবালাকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হিজামা গ্রহণের জন্য যে তাগিদ দিয়েছেন; তা সত্যিই আমাদের জন্য অত্যন্ত কল্যানকর।

♦️ হিজামায় যে সকল রোগের চিকিৎসা করা হয়।

১। মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘমেয়াদী মাথাব্যথা (Migraine)
২। দূষিত রক্ত পরিষ্কারকরণ (Purify Blood)
৩। উচ্চরক্তচাপ (High Blood Pressure)
৪। ঘুমের ব্যাঘাত (insomnia)
৫। স্মৃতিহীনতা (Parkinson’s disease)
৬। অস্থি সন্ধির ব্যাথা/গেটে বাত/বাতের ব্যথা (Arthritis/Rheumatism)
৭। জয়েন্টের ব্যথা (Gout Pain)
৮। পিঠে বা সারা শরীরের (Backache/scabies)
৯। হাঁটু ব্যাথা (Knee Pain)
১০। পায়ের তালুর ব্যথা(heel pain)
১১। মাথা ব্যথা (Head-ache)
১২। ঘাড়ে ব্যাথা ও কাঁধে ব্যথা (Neck & Shoulder Pain)
১৩। কোমর ব্যাথা (Waist Pain)
১৪। মাংসপেশীর ব্যাথা (muscles spasm)
১৫। দীর্ঘমেয়াদী পেট ব্যথা (Adbominal Pain)
১৬। হাড়ের স্থানচ্যুতি জনিত ব্যাথা, ফ্র্যাকচার পেইন
১৭। রক্তসংবহন তন্ত্রের ইনফেকশন(Blood circulation system)
১৮। ত্বকের বর্জ্য নিষ্কাশন (remove toxin)
১৯। বিভিন্নরকম চর্মরোগ (Chronic Skin Diseses)
২০। সাইনুসাইটিস (Sinuses problem)
২১। এজমা/হাঁপানি (asthma)
২২। হৃদরোগ (Cardiac Disease)
২৩। টনসিলের সমস্যা (Tonsillitis )
২৪। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Low Immunity)
২৫। দাঁত,মুখ, গলা ব্যথা (Larynx, Gums and dental disease)
২৬। গ্যাস্ট্রিক পেইন, গ্যাস্ট্রিক আলসার, এসিডিটি, esophageal varices (Gastric/Ulcer)
২৭। দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ (Chronic Skin Diseases)
২৮। ফোঁড়া-পাঁচড়া সহ আরো অনেক রোগ,
২৯। ডায়াবেটিস (Diabetes) ও ডায়াবেটিক ফুট,
৩০। ভার্টিব্রাল ডিস্ক প্রোল্যাপ্স/ হারনিয়েশান,
৩১। চুল পড়া (Hair fall),
৩২। মানসিক সমস্যা (Psychological disorder)
৩৩। কিডনির সমস্যা (Kidney Disease)
৩৪। স্পোর্টস ইঞ্জুরি (খেলোয়াড়, আর্মি, কনট্যাক্ট স্পোর্টস)
৩৫। কানের সমস্যা
৩৬। ক্যান্সারের ব্যাথা নিয়ন্ত্রন,
৩৭। লিভার ডিজিজ, পোর্টাল হাইপারটেনশান,
৩৮। হরমোনাল সমস্যা,
৩৯। ব্রেইন ডিজিজ ও ডিজঅর্ডার,
৪০। ক্রনিক কফ/ফুসফুসের রোগ (Chronic Chugh/Lung Disease)
৪১। ব্রন,
৪২। প্যারালাইসিস (স্ট্রোক, মেরুদন্ডে আঘাত, গিয়েন বারে সিন্ড্রোম, ফেসিয়াল প্যারালাইসিস বা বেল’স পলসি প্রভৃতি)
৪৩। অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের ক্ষয়)
৪৪। vertigo (মাথা ঘোরা)
৪৫। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য (Chroic Constipation)
৪৬। বিষন্নতা ও স্নায়বিক চাপ (Depression & Nervous Stress)

♦️ মাথায় হিজামা লাগানোর দ্বারা বিশেষভাবে কিছু রোগের উপকার হয় সেটা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হল।

১। মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘ মেয়াদী মাথাব্যথা এবং সাধারন মাথাব্যথা।
২। উচ্চ রক্তচাপ।
৩। রক্তদূষন।
৪। ঘুমের ব্যঘাত।
৫। স্মৃতি ভ্রষ্টতা।
৬। ঘাড়ে ব্যথা।
৭। হরমোনাল সমস্যা ।
৮। সাইনুসাইটিস।
৯। মানসিক সমস্যা।
১০। চুল পড়া।
১১। পারকিনসন্স ডিজিজ।
১২। ব্রেইন ডিজিজ।
১৩। মাদকাসক্তি।
১৪। প্যরালাইসিস।
১৫। যাদু টোনার সমস্যা ইত্যাদি